ফুটবল খেলার ইতিহাস ও উৎপত্তি

ফুটবল খেলার ইতিহাস ও উৎপত্তি – কীভাবে এল ফুটবল খেলা

ইতিহাস খেলা ধূলা

ফুটবল খেলার উৎপত্তি নিয়ে বেশ মতবেদ রয়েছে।কীভাবে শুরু হলো এত জনপ্রিয় খেলা ফুটবল।চলুন জেনে নেই ফুটবল এর আদি ইতিহাস।

আমরা আজকে যেই ফুটবল দেখি সেটি এমনে এমনে আসেনি এর পেছনে রয়েছে অনেক গল্প অনেক ইতিহাস, রয়েছে অনেক ত্যাগ।চলুন জানি ফুটবল খেলার ইতিহাস:

আদি ফুটবল খেলার ইতিহাস

মিশর পারস্য বেবিলন গ্রিস ও চীনে ফুটবল খেলাটি বিভিন্ন নামে প্রচলন ছিল।প্রায় ৩ হাজার বছর পূর্বে মানুষের মাঝে বল দিয়ে খেলার প্রবণতা লক্ষ করা যায় মেসোমেরিকান সভ্যতাতে।তারা প্রথমে পাথর এর বল দিয়ে ফুটবল খেলত যেটাকে সূর্যের প্রতীক বলা হয়।এরপর তারাই প্রথম রাবার বল ও ব্যাবহার করেন।

ধারণা করা হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ অব্দের দিকে রোমান ও গ্রিকরা ফুটবল খেলা শুরু করেছিল।রোমান ও গ্রিকরা বল দিয়ে নানা ধরণের খেলা করত।তার মধ্যে কুসুসুপা খেলাটি তারা পা ব্যাবহার করে খেলত।যা গ্রিক নাট্যকারদের লেখা বিভিন্ন বইতে উল্লেখ রয়েছে।

চীনা ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দে হানরাজ বংশের সময় পশম বা চামড়ার তৈরী বল দিয়ে লাথি মেরে কুযু ইংলিশে কিক বল নামে এক খেলা ছিল।চীনে সেনাবাহিনীরা খেলত এই খেলা।সেই সময় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এর জন্য এই খেলাটি হতো।প্রতি দলে ৬ জন সদস্য থাকত।খেলার সময় ধাক্কা দেওয়া ও ফেলা দেওয়া যাবে না এমন কোনো আইন ছিল নাহ।

সময় এর সাথে সাথে এটি বিস্তার লাভ করে মালয় উপ দ্বীপে এবং পরে জাপান ও প্রশান্ত মহাসাগরের অন্যান্য দীপে এবং অষ্ট্রেলিয়াতে ছড়িয়ে পরে।

জাপানে এই খেলাকে খেমারি বলত।বৃত্তাকার মাঠে লাখিমেরে এই খেলা খেলত এবং চেষ্টা করত বল মাঠিতে ফেলা যাবে নাহ।কোরিয়াতে এর নাম ছিল ছুকবু এবং অষ্ট্রেলিয়াতে মার্নবু।১৮ শতকে অষ্ট্রেলিয়াতে আদিবাসীরা গাছের পাতা এবং মুলকে ব্যাবহার করে এই খেলা খেলত।

আধুনিক ফুটবল এর উৎপত্তি

আধুনিক ফুটবল এর বিকাশ ঘটে ইংল্যান্ডে এবং আধুনিক ফুটবল এর জনক বলা হয় ইংল্যান্ডকে।কিন্তু ইতিহাস বলে ইংল্যান্ডে যখন এই খেলাটি আসে তখন ১০৬৬ সাল।বিশ্বে কোথাও এই খেলা নিয়ে সমস্যা হয় নি কিন্তু ইংল্যান্ডে এই খেলা নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়।অনেকে মারা গেছে অনেকে পঙ্গু হয়েছেন।যে যাকে পারত মারত মূল কারণ ইংল্যান্ডে এই খেলার নিয়ম কানুন ছিল নাহ।তারপর ও অনেক জনপ্রিয় ছিল।রাজপ্রাসাদ বারবার আদেশ করেও খেলাটি বন্ধ করতে পারে নি ব্রিটেন রাজ পরিবার।

ঐ একই সময়েই ইতালিতে কেলচিও নামে এক ধরণের খেলা শুরু হয় যা ছিল অত্যান্ত সাজানো গুছানো একটি খেলা।কেলচিও নামের উৎপত্তি হয় কেলচিয়ার নামের শব্দ থেকে যার অর্থ কিক।কেলচিও অর্থ হলো ফুটবল।এই খেলাটির ছিল নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন।খেলোয়ারদের শিখানোর জন্য রয়েছে শিক্ষক যারা খেলা পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ দিতেন।

এরপর প্রায় ৩০০শ বছর পর ১৯ শতক এর দিকে ইংল্যান্ডের রিচার্ড মূল কাস্টার নামক এক স্কুল শিক্ষক ইতালিতে এই রকম খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে এসে এই রকম সাজানো গুছানো খেলা দেখে বিভিন্ন স্কুলে এই খেলা চালু করার চেষ্টা চালান।অনেক বাধার পর সফলও হন তিনি।এরপর ফুটবল খেলাটি পুরো বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

ফুটবল খেলার নিয়ম কানুন:

মধ্যযুগের শেষের দিকে জেসিথ্রি প্রথম এই খেলার নিয়ম তৈরী করেন।কিন্তু তারপর কিছু অগুছালো বিষয় ছিল।তার মধ্যে ছিল দুই দলের খেলোয়ার এর মধ্যে জন সংখ্যার পার্থক্য যেমন কোনো দলে ছিল ১৫ জন খেলোয়ার প্রতিপক্ষ দলে ছিল ২০ জন অন্যদিকে গোল রক্ষক ছিল ৫ জন।এত বেশি খেলোয়ার থাকায় মাঠে গন্ডগোল লেগেই থাকত।তাই পরবর্তীতে ১৮৭০ সালে নিয়ম করা হয় জনপ্রিয় খেলা ফুটবল এর বলা হয় প্রত্যেক দলে ১১ জন করে খেলোয়ার থাকবে।এবং গোলরক্ষক থাকবে ১ জন।তাই ১৮৭০ আধুনিক ফুটবলের যাত্রা শুরু হয়।

ফুটবল খেলার জার্সি

১৯২৮ সর্বপ্রথম খেলোয়ারদের চেনার জন্য জার্সিতে নাম্বার বসানো হয়।তখন সাগতিক দলের জার্সি নাম্বার থাকত ১ থেকে ১১ পর্যন্ত এবং অন্যদলের নাম্বার থাকত ১২ থেকে ২২ পর্যন্ত।কিন্তু ১৯৪০ সালে সিদ্ধান্ত হয় একই নাম্বার বিপক্ষ দলের খেলোয়ারও নিতে পারবে।কিন্তু নাম্বার ঐ ১ থেকে ২২ পর্যন্ত হতে হবে।এবং ১৯৯৩ সালে সর্বপ্রথম জার্সিতে খেলোয়ার এর নাম লেখা হয়।

ধন্যবাদ

www.learningdiagram.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *