মোবাইল ব্যাবহার

মোবাইল ফোন আসক্তি – মোবাইল ব্যাবহার এর ক্ষতিকর দিক ও বাচার উপায়

টেকনোলজি প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বহুল ব্যাবহ্রত বস্তুটি হলো স্মার্টফোন।আমরা মোবাইল ফোন ছাড়া যেন একটি মুহুর্ত কাটাতে পারি নাহ।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারে আমরা এখন প্রায় সবাই মোবাইল ফোন এর উপর আসক্ত কিন্তু আমরা জানি নাহ এটি কতটা ভয়ংকর। তাই এই আর্টিকেল এর মাধ্যেমে আপনারা জানতে পারবেন মোবাইল এর ক্ষতিকর দিক, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যাবহার কীভাবে আমাদের জীবনকে ধ্বংস করছে, কীভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে বের হয়ে আসবেন।

তাহলে চলুন প্রখমে জানি অতিরিক্ত মোবাইল ব্যাবহার এর কারনে আমাদের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

মোবাইল ব্যাবহারের ক্ষতিকর দিক:

1.অতিরিক্ত মোবাইল ব্যাবহারের কারণে মোবাইল এর রেডিয়েশন আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কিডনি ব্রেন সহ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার চান্স থাকে।এমনকি সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে।

রেডিয়েশন কতটা ক্ষতিকর বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

2.অতিরিক্ত মোবাইল চালালে কোনো কাজ মন দিয়ে করতে পারবেন নাহ যেমন পড়াশুনা, খাওয়া-দাওয়া সব কাজে একটা সময় দেওয়ার পর ফোন এর জন্য ব্যাকুল হয়ে যাবেন।

3.রাত জেগে মোবাইল চালালে চোখের ক্ষতি ও অপর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকবে।

4.বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মোবাইল এর ব্যাবহারে স্মৃতিশক্তি ও হার্টের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

5.মোবাইল ফোন এর অতিরিক্ত ব্যাবহারে ব্রেণ, মাথা ও গলার টিউমার হতে পারে বলে মনে করেন আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি।

6.মোবাইলে অতিরিক্ত সেলফি তোলায় সেলফিটিস নামে নতুন আরেক ধরনের মানসিক রোগের সৃষ্টি হয়েছে।

মোবাইল ফোনে আসক্তি হওয়ার কারণ:

বর্তমানে স্মার্ট ফোন বাজারে এসে আমরা সবাই মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন এর মধ্যে অনেক সময় ব্যয় করি।কারণ এখনকার স্মার্টফোন গুলো একেকটি ছোট আকারের কম্পিউটার এর সাথে তুলনা করতে পারি।বর্তমানে কম্পিউটার এর মতো স্মার্টফোন গুলোতে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা এর প্রতি আসক্তি হওয়ার মূল কারন।এছাড়াও স্মার্টফোন / মোবাইল ফোন এর প্রতি আসক্তি হওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে:

1.অতিরিক্ত Social media site এর ব্যাবহার messaging ও texting.

2. বেশি পরিমাণে Video shearing site : YouTube, Tiktok, Likee এর ব্যাবহার।

3.বর্তমান স্মার্টফোন গুলোর Game গুলো খুব মজাদার হওয়ায় শিশু কিশোর সবাই আসক্ত হয়ে পড়ছে।আর এই আসক্তি থেকে শিশু কিশোরদের বের করে আনতে সবার আগে অভিভাবক ও রাষ্ট্রের সচেতন ভুমিকা পালন করতে হবে।অন্যথায়, অচিরেই মোবাইল ফোন এর অতিরিক্ত ব্যাবহারে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।

4.বর্তমানে কিশোরদের জন্য সবচেয়ে বয়াল থাবা হলো পর্ণ আসক্তি।জরিপে দেখা গেছে বর্তমানে প্রায় ৯০ শতাংশ ছেলে ও ৬৫ শতাংশ মেয়ে Porn Addicted.

স্মার্টফোন মোবাইল ফোনে আসক্তি হওয়ার লক্ষণ?

একটি স্মার্টফোন তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই আকর্ষণীয় বস্তু।জেনে না জেনে আমরা সবাই এই যন্ত্রে আসক্ত হয়ে পড়ি।কীভাবে বুজবেন আপনি মোবাইল ফোন এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছেন।

নিচে মোবাইলফোন এর প্রতি আসক্ত হওয়ার লক্ষণ গুলো তুলে ধরা হলো:

1.আপনি যদি মোবাইল ফোনে আসক্ত হন তাহলে আপনি কিছুতেই কোনো কাজ মনোযোগ দিয়ে বেশিক্ষণ করতে পারবেন নাহ মনে হবে মোবাইলটা একটু দেখি আর মোবাইলটা হাতে নিলেই শেষ।

2.যদি মোবাইলে কোনো Notification Sound শোনার পর মোবাইল হাতে না নিয়ে থাকতে নাহ পারেন তাহলে আমি বলব আপনি মোবাইলে তীব্রভাবে আসক্ত।

3.আপনি যদি ফোনে দৈনিক সর্বোচ্চ 2-3 ঘন্টার বেশি সময় ব্যায় করে Gaming, Social networking, Web surfing করেন অপ্রয়োজনে তাহলে আপনি নিংসন্দেহে আপনি Mobile addicted.

নোট: 2-3 ঘন্টাও অনেক সময়।

4.যদি আপনি Video Sharing site YouTube, Tiktok অ্যাপ গুলোতে যদি ২/৩ টি ভিডিও দেখার নিয়ত করে অতিরিক্ত ভিডিও ও সময় ব্যায় করেন।

5.রাতে ঘুম এর সময় যদি আপনার ফোন ছাড়া ঘুম না আসে তাহলে আপনার জন্য ভবিষ্যতে খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে কেননা বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুমানোর ২ ঘন্টা আগে মোবাইল, কম্পিউটার থেকে দূরে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

মোবাইল থেকে দূরে থাকার কৈাশল:

নিজের কোনো বদ অভ্যাস বাদ দেওয়ার জন্য অবশ্যেই আপনার মনের জোর সবার আগে।মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার জন্য আমি আপনাকে কিছু টিপস দিতে পারি আর এটি মানার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।তাহলে চলুন শুরু করি:

১.মোবাইল ব্যাবহার থেকে দূরে থাকা:

স্মার্টফোন ব্যাবহার কমানোর জন্য অবশ্যই আপনার আগে স্মার্টফোন থেকে দূরে থাকতে হবে।আর সেটি অবশ্যই আপনার একদিনে সম্ভব নাহ তাই আপনি যদি এখন দৈনিক Average ২ চালান তাহলে আপনি সেটিকে আধা ঘন্টা বা ১০ মিনিট কমিয়ে আনুন।যেখানে আপনি ৩০ মিনিট গেম খেলেন সেখানে ২০ মিনিট করে ফেলুন।ঠিক একই ভাবে ফেসবুকিং ভিডিও দেখা সব কিছু কমান আর রেডিয়েশন এর ক্ষতিকর দিক গুলো মাথায় রাখুন।

ফোনে নোটিফিকেশন আসলেই দেখতে হবে এমন কোনো কথা নয় দিনে গুরুত্বপূর্ণ Notification ১টি আসলে গুরুত্বপূর্ণহীন আসবে ৫ বা তারও বেশি।

২.নোটিফিকেশন থেকে দূরে থাকার উপায়:

ফোনে SMS বা Facebook এর আওয়াজ শুনলে আমাদের মন আর মানে নাহ তাই আপনার ফোনটি সব সময় সাইলেন্ট করে রাখুন যাতে করে আওয়াজ না আসে আর এই জন্য অন্য আরেকটি বাটন মোবাইল ব্যাবহার করুন যেই নাম্বারটা সবার কাছে দেওয়া সেই নাম্বারটা ঐ ফোনে চালু রাখুন।আর কাছে রাখুন কারন এটি কাছে রাখলেও স্মার্টফোন এর মতো সুবিধা না থাকায় চালাবেন নাহ।

৩.মোবাইল ফোন দূরে রাখার উপায়:

মোবাইল ফোনকে দূরে রাখার জন্য আজকে আপনাদের সাথে একটি দূরধান্ত অ্যাপ এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।App এর নাম হলো: Keep Out me

Keep-out-me
Keep-out-me

এই অ্যাপটির সুবিধা হলো আপনি একটি টাইম সেট করে ফোনটিকে লক করে দিতে পারবেন আর এই এপটি এতই শক্তিশালি যে এই লক করা সময়ে আপনি আর কোনো কাজ এই ফোনে করতে পারবেন নাহ ফোনটি চালুই হবে নাহ কোনো উপায়ে।

সেই জন্য বিশেষ মুহুর্তে অন্য একটি ফোন ব্যাবহার করবেন যাতে করে কথা বলতে পারেন যেই সিমে বেশি কল আসে সেই সিমটি ঐ ফোনে রাখবেন।

4.অবসর সময়ে মোবাইল ছাড়া থাকুন:

আমরা সবায় মূলত অবসর সময়ে অথবা যখন একা থাকি তখন ফোন ব্যাবহার করি।যদি অবসর সময়ে আপনি মোবাইল ব্যাবহার খেকে দূরে থেকে অন্য কোনো কাজ যেমন বই পড়া (ঞ্জান বৃদ্ধি হবে), খেলাধূলা (স্বাস্থ্যর জন্য উপাকারী) করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।এত করে মন স্বাস্থ্য উভয়ই ভালো থাকবে।

মানুষ মূলত অভ্যাসের দাস।আপনি যদি একবার ফোন কম চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার আর ফোন নিয়ে বসে থাকতে ভালো লাগবে নাহ এবং ফো থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

ধন্যবাদ

www.learningdiagram.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *