যশোর রোড

পশ্চিম বঙ্গের অনন্য সুন্দর একটি রাস্তা যশোর রোড।আবার এই রাস্তাকে ভারত তথা পশ্চিম বঙ্গের এক মাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাস্তাও বলা হয়।এই খানে হাটলে আপনি শুধুমাত্র শতাব্দী প্রাচীন গাছ গুলো দেখতে পাবেন তা নয় এই গাছ এবং রাস্তার সাথে মিশে আছে উত্তাল ও ভয়াবহ বাংলাদেশ এর ১৯৭১ এর যুদ্ধের ইতিহাস।আসুন জেনে নেই রাস্তাটির অবস্থান ও ইতিহাস সম্পর্কে।

যশোর রাস্তার অবম্থান:

বর্তমানে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বংলার পেট্রাপুল সিমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের যশোর জেলার বকচর পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তাটি।রাস্তাটি ভারতের অংশে আছে ৬১ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে আছে ৩৮ কিলোমিটার রাস্তা।এই রুটে কলকাতা ঢাকা আগরতলা ও কলকাতা টু খুলনা রুটে আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস রয়েছে।

সড়ক এর বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশ এর এই ৩৮ কিলোমিটার অর্থাৎ যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে আছে ২ হাজার ৩’শ ১২ টি প্রাচীন এই বৃক্ষ অন্যদিকে ভারতের অংশের রাস্তার দু’পাশে এই গাছের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ৩’শ ৩২ টি।১৯৭১ সালের যুদ্ধে জীবন বাচাতে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী এই যশোর রোড দিয়েই ভারতে প্রবেশ করেছে।সেই সময় বাংলাদেশ এর মানুষের বেচে থাকতে ভারতে যাওয়ার এক মাত্র পথ ছিল এই রাস্তা।এই পথ চলার ক্লান্তি সহ্য করতে না পেরে অনেক শরণার্থীর মৃত্যু হয়।এই রাস্তার দিকে তাকালে বাংলার সেই ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে চোখের সামনে।

রাস্তাটির নির্মাণ ইতিহাস:

শুনা যায় ১৮৪০ সালে নড়াইলের জমিদার কালীপোদ্দার তার মায়ের গঙ্গা স্নানের জন্য যশোরের বকচর থেকে কলকাতার কালীঘাট পর্যন্ত এই রাস্তাটি নির্মাণ করেন।এই কারণে এই রাস্তাটি স্থানীয় মানুষের কাছে আজও কালীবাবুর রাস্তা নামে পরিচিত।যশোর রোড এর প্রাচীন নাম বলা হয় এটিকে।ইংরেজদের আগমণের পরবর্তীতে এই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় যশোর রোড।ইংজেদের আমলে অভিবক্ত বাংলার যশোর শহরে ছিল ব্রিটেন বাই সেনার প্রধান ঘাটি।ফলে সেই সময় বিমান ঘাটির সাথে কলকাতার যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য এই রাস্তাকে অধুনিকরণ করা হয়।তখন তার দিনে আনুমানিক প্রায় ২ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা খরচ হয় এই রাস্তা তৈরীতে।কয়েক হাজার শ্রমিকের প্রচেষ্টায় ১৮৪২ সালে সম্পূর্ণ হয় এই রাস্তার নির্মাণ কাজ।

যশোর রোড কে নিয়ে কবিতা ও গান:

আমেরিকান কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষের দিকে কলকাতায় সাহিত্যিক সুনীল বঙ্গোপাধ্যায় এর বাড়িতে বেড়াতে আসেন।বাংলাদেশর শরণার্থীগণ তখন সিমান্তবর্তী পশ্চিমবর্গের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে আশ্রয় নেয়।সেবার বৃষ্টিতে যশোর রোড ডুবে যায় তাই অ্যালেন নৈাকা করে যশোর যায় সুনীল বঙ্গোপাধ্যায় কে সাথে নিয়ে।তারা যশোর সিমান্ত ও পার্শ্ববর্তী সিমান্ত এলাকার শরণার্থীর দূর অবস্থা দেখে আমেরিকা ফিরে গিন্সবার্গ ইতিহাস বিথ্যাত সেই কবিতা “September on Jessore Road” লিখেন।পরবর্তীতে আমেরিকান গায়োক Bob marley কবিতাটিকে গানে রুপান্তর করেন।

 

ধন্যবাদ

www.learningdiagram.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Sorry