রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ – Queen 2nd Elizabeth

ইতিহাস ব্রিটেন এর রাজ পরিবার

এক নজরে,

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর পরিচয়:

জন্ম ও মৃত্যু: ২২ এপ্রিল ১৯২৬ সাল থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

রানীর বয়স: ৯৬ বছর ৪ মাস ১৭ দিন।

দায়িত্ব গ্রহণের সময়কাল:৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২।

দায়িত্ব পালন করেন: ৭০ বছর ৭ মাস ২ দিন।

বাসগৃহ : হাউস অব উইন্ডসর

দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী: প্রিন্স ফিলিপ।

রানী এলিজাবেথ এর সন্তান: তৃতীয় এলিজাবেথ, রাজকুমারী অ্যান; ইয়র্কের ডিউক যুবরাজ অ্যান্ড্রু; এবং ওয়েসেক্সের আর্ল যুবরাজ এডওয়ার্ড

পিতার নাম : ষষ্ঠ জর্জ

মাতার নাম : এলিজাবেথ বউয়েস লিয়ন

ধর্ম: চার্চ অব ইংল্যান্ড ও চার্চ অব স্কটল্যান্ড

ধনীদের তালিকা: সব মিলিয়ে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রায় ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি রেখে গেছেন।রানী দিত্বীয় এলিজাবেথ বিশ্বের শীর্ষ রাজকীয় ব্যাক্তিদের মধ্যে ধনী তালিকায় ১২তম অবস্থানে রয়েছেন।

বিশ্বে এমন লোক খুজে পাওয়া কষ্ট সাধ্য যে কিনা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেধ কে চিনে নাহ বা নাম শুনে নিই।

দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৬ বছর বয়সে জন সম্মুখে আসেন এবং ১৮ বছর বয়সে সামরীক বাহিনীতে যোগদান করেন।এই আর্টিকেলটি মূলত সাজানো হয়েছে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর জন্ম ও মৃত্যু:

দিত্বীয় এলিজাবেথ এর জন্ম ২২ এপ্রিল ১৯২৬ সালে।এবং মৃত্যু ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২।

রানী এলিজাবেথ এর মৃত্যুতে পুরো ব্রিটেন সহ বিশ্ববাসী গভীর শোক ঞ্জ্যাপন করেন।এর মধ্যে ছিলেন বহু বড় বড় রাজনৈতীক নেতা ও কমনওয়েলথ এর রাষ্ট্রপ্রধান গণ।

তার মৃত্যুতে বাংলাদেশে ৩ দিন এবং ইংল্যান্ডে ১০ দিন রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালিত হয়।

রানী এলিজাবেথ এর নাম:

রয়্যাল ভাষ্যকার ও জার্নালিস্ট ডেইজি ম্যাকান্দ্রোর ভাষ্য মতে রানী যখন তার নাম উচ্চারন করতে পারতেন নাহ তখন তার বাবা ডিউক অফ ইয়র্ক (পরে রাজা ষষ্ঠ জর্জ হন) ও মা এলিজাবেথ বোয়েস-লিওন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে আদর করে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে মিলিবেট নামে ডাকতেন।রানীর জীবন ভিত্তির উপর রেখা ২০১২ সালের বই সেলি বেডেল স্মিথে রানীর নাম মিলিবেট উল্লেখ করা হয়।রানীর স্বামী যুবরাজ ফিলিপ এর মৃত্যুর পর কফিনে রানী নিজের হাতে লিখে একটি নোট রাখেন যেখানে তিনি মিলিবেট নামে স্বক্ষর করেছেন।

রানী দিত্বীয় এলিজাবেথ এর নাম করণ করা হয় রাজা পঞ্চম জর্জের মায়ের নামানুসারে।

রানী এলিজাবেথ এর রাজত্ব ও রাজত্বকাল

ব্রিটিনের দ্বিতীয় রানী এলিজাবেথ ১৬ টি কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশ এর রানী বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশগুলো হলো: যুক্তরাজ্য, বারবাডোস, কানাডা, সেন্ট লুসিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, জামাইকা, নিউজিল্যান্ড, টুভালু, বাহামাস, গ্রেনাডা, অস্ট্রেলিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন, বেলিজ, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা এবং সেন্ট কিট্‌স ও নেভিস। কমনওয়েলখ এর প্রধান ছাড়াও তিনি ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট কমনওয়েলথ অব নেশনস এর প্রধান ছিলেন।বাংলাদেশ এর সদস্য ছিলেন।পূর্বে ব্রিটিশ রাজ পরিবার যেসব দেশ স্বাধীন করেছেন যেসব দেশ কমনওয়েলথ এর সদস্য।

ব্রিটিনের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত যত রানি এসেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থেকেছেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেধ।গত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দিনটি রানী এলিজাবেথ এর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন কেননা এই দিন তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড অর্জন করেছেন।এই দিন (০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২) রানী দ্বিতীয় এলিজাবেধ এর ৭০ বছর ক্ষমতার পূর্ণ হয়।

রানী দিত্বীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের সিংহাসন লাভ করেন মাত্র ২৫ বছর বয়সে।বাবার মৃত্যুর পর ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সিংহাসনে বসেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

মিলিবেট এর রানী হওয়ার ইতিহাস

আপনি জানলে অবাক হবেন হয়তো, ব্রিটেনের রানী হিসেবে মিলিবেট এর সিংহাসনে আরহণের কোনো কথায় ছিল না কারণ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর বাবার বড় ভাই ছিল এবং তার নাম ছিল অষ্টম এডওয়ার্ড।রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর দাদার মৃত্যুর পর উত্তরাধীকারী হিসেবে অষ্টম এডওয়ার্ড রাজা হিসেবে দায়িত্ব নেন।কিন্তু ব্রিটেন রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী রাজারা কোনো বিধবা বিপত্বীক নারীকে বিবাহ করতে পারবেন নাহ যদি করতে হয় তাহলে তাকে সিংহাসন ত্যাগ করতে হবে।

তাই রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড বিপত্নীক নারী ওয়েলিস সিম্পসনকে বিবাহ করায় ১৯৩৬ সালে অষ্টম এডওয়ার্ডকে সিংহাসন ত্যাগ করতে হয়।এবং পরে অষ্টম এডওয়ার্ড এর ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হয় এবং রাজা ষষ্ঠ জর্জ এর মৃত্যুর পর উত্তরাদীকারী সূত্রে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ রানী হয়।কারণ রাজা ষষ্ঠ জর্জ এর কোনো পুত্র সন্তান না থাকায় বড় মেয়ে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে রাজা ষষ্ঠ জর্জ উত্তরাধিকারী করেন।এখন পর্যন্ত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথই ব্রিটেনের শেষ নারী শাসক।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মাত্র ২৫ বছর বয়সে রানী হন।রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর মৃত্যুর পর তার ছেলে তৃতীয় চার্লস সয়ংক্রিয় ভাবে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে দায়িত্ব পায়ব্রিটিশ সিংহাসন কখনো খালি রাখার নিয়ম নেই তাই রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর মৃত্যুর পর উত্তরাধীকার সূত্রে তার ছেলে তৃতীয় চার্লস সয়ংক্রিয়ভাবে রাজা হয়।আনুষ্ঠানীক ভাবে রাজা হিসেবে তৃতীয় চার্লস ঘোষণা করা ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে

দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর বিবাহ

রানী দ্বিতীয় এলিজাভেথ এবং গ্রিক ও ডেনমার্ক এর প্রাক্তন যুবরাজ ফিলিপ এর বিবাহ সম্পন্ন হয় ১৯৪৬ সালে।তবে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর যুবরাজ ফিলিপকে বিয়ের স্বীকৃতি পায়।

করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুখের জন্য যুবরাজ ফিলিপ এর মৃত্যু হয়।জানা যায় স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি অনেকটা ভেঙে পড়েন।

যুবরাজ  ও রানী র দাম্পত্য জীবনে চারটি সন্তান হয় তারা হলো যথাক্রমে: তৃতীয় এলিজাবেথ, রাজকুমারী অ্যান; ইয়র্কের ডিউক যুবরাজ অ্যান্ড্রু; এবং ওয়েসেক্সের আর্ল যুবরাজ এডওয়ার্ড।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে যত সিনেমা ও সিরিজ

এলিজাবেথকে নিয়ে জানতে পুরো বিশ্বের মানুষের আগ্রহের কমতি নেই।প্রতিদিন সার্চে ইন্জিনগুলোতে তাকে নিয়ে বিশ্বের অনেক মানুষ সার্চ করে এখন পর্যন্ত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে অনেক সিনেমা ও সিরিজ তৈরী হয়েছে। কোনোটাতে তিনি নিজে অভিনয় করেছেন আবার কোনোটা তাকে নিয়ে তৈরী।মাত্র ১৫ বছর বয়সসে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মঞ্চে অভিনয় করেন।দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় চার বছরের একটি প্রদর্শনীতে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ চারটি নাটকে অভিনয় করেন সেগুলো হলো: (১) সিনেড্রেলা (২) স্লিপিং বিউটি (৩) আলাদিন (৪) ওল্ড মাদার রেড রাইডিং বুটস।রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে সবচেয়ে আলোচনা ও নেটফ্লিক্সের ব্যাবসা সফল সিনেমা হলো দ্যা ক্রাউন।রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর ছোট বোন এবং রাজা ষষ্ঠ জর্জ এর ছোট মেয়ে মার্গারেট।দুইবোন এ সম্পর্ক ছিল খুবই মধুর।এবং তাদের দুই বোনকে নিয়ে তৈরী হয় এলিজাবেথকে ও মার্গারেট: লাভ এন্ড লয়্যালটি।এছাড়াও রয়েছে প্রিন্সস ডায়ানার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গঠিত হয় সিনেমা দ্য কুইন এবং রাজা ষষ্ঠ জর্জকে নিয়ে তেরী হয় দ্য রয়েল হাউজ অব উন্ডসর।

সিংহাসনে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর অবদান:

তার ৭০ বছর এর শাসন কার্যে সিংহাসন ও বহু ইতিহাস এর সাক্ষি হয়েছেন।ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখতে রানী দ্বি তীয় এলিজাবেথ এর যে অবদান তা অসীম। তার বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ এ মৃত্যুর পর তিনি কমনওয়েলথ এর প্রধান হন।তিনি শুধু ব্রিটেন নয় পুরো বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শাসনকারী শাসক ছিলেন। গণতন্ত্রের এই যুগে রাজ পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে তার ভূমিকা অতুলনীয়।রাজ পরিবারের অয়ত্তে থাকা দেশ গুলোর মধ্যে ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সহ সকল দেশে জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচন এবং সেই সরকার এর হাতে সকল ক্ষমতা থাকলেও তিনি রাজ পরিবার সম্মান ধরে রাখতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা রেখেছেন।এমনকি রাজ পরিবারের সদস্য গণ এখনও একেক জন আন্তর্জাতিক সেলিব্রেটি।

ধন্যবাদ

www.learningdiagram.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *